Friday, 18 April 2025

অলঙ্কার কাকে বলে? উপমা, রূপক ও উৎপ্রেক্ষা অলঙ্কার

অলঙ্কার কাকে বলে? উপমা, রূপক ও উৎপ্রেক্ষা অলঙ্কার

সাহিত্যে সৌন্দর্য সৃষ্টি এবং ভাষাকে অলংকৃত করার জন্য যেসব উপাদান ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে অলঙ্কার বলা হয়। এটি কবিতা বা গদ্যকে আরও মাধুর্যমণ্ডিত ও আকর্ষণীয় করে তোলে।

অলঙ্কার কাকে বলে?

যে শব্দ বা বাক্য রচনার মাধ্যমে ভাষা ও ভাব প্রকাশে সৌন্দর্য, অলংকার ও রস যুক্ত হয়, তাকে অলঙ্কার বলে। এটি সাহিত্যের শোভা বৃদ্ধি করে এবং পাঠকের মনে প্রভাব ফেলে।

অলঙ্কার দুই প্রকার:

  1. শব্দালঙ্কার: শব্দের গঠন ও উচ্চারণের সৌন্দর্যকে কেন্দ্র করে তৈরি অলঙ্কার।
  2. অর্থালঙ্কার: ভাবের গাম্ভীর্য ও কাব্যিক চিত্র প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত অলঙ্কার।

উপমা অলঙ্কার:

যখন একটি বস্তুকে অন্য একটি বস্তুর সাথে সাদৃশ্য স্থাপন করে উপস্থাপন করা হয় এবং 'যেমন', 'তেমনি', 'প্রতি', 'নয়নে', 'সদৃশ' ইত্যাদি উপমাসূচক শব্দ ব্যবহৃত হয়, তখন সেটিকে উপমা অলঙ্কার বলে।

উদাহরণ: সে সিংহের মতো সাহসী।

👉 এখানে “সে” উপমেয়, “সিংহ” উপমান, “মতো” উপমাসূচক শব্দ।

রূপক অলঙ্কার:

যখন কোনো উপমাসূচক শব্দ ব্যবহার না করে সরাসরি একটি জিনিসকে অন্য জিনিস হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তখন সেটিকে রূপক অলঙ্কার বলে।

উদাহরণ: তুমি চাঁদ।

👉 এখানে “তুমি” কে “চাঁদ” বলা হয়েছে, কিন্তু ‘মতো’ বা অন্য কোনো উপমাসূচক শব্দ নেই।

উৎপ্রেক্ষা অলঙ্কার:

যখন কোনো কল্পনা বা অবাস্তব ব্যাপারকে বাস্তবের চেয়ে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করা হয়, তখন সেটিকে উৎপ্রেক্ষা অলঙ্কার বলে।

উদাহরণ: সে এত সুন্দর, যেন স্বয়ং চাঁদ লজ্জা পায়।

👉 এখানে একটি অতিরঞ্জন আছে — চাঁদের লজ্জা পাওয়া বাস্তবে সম্ভব নয়, কিন্তু কল্পনায় করা হয়েছে।

তালিকা আকারে তুলনা:

অলঙ্কার সংজ্ঞা উদাহরণ
উপমা উপমাসূচক শব্দসহ সাদৃশ্য সে সিংহের মতো সাহসী।
রূপক উপমাসূচক শব্দ ছাড়া সাদৃশ্য তুমি চাঁদ।
উৎপ্রেক্ষা অতিরঞ্জনসহ কল্পনাপ্রসূত উপমা তুমি এত সুন্দর, চাঁদও লজ্জা পায়।

উপসংহার:

অলঙ্কার সাহিত্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধির একটি চমৎকার উপায়। উপমা, রূপক ও উৎপ্রেক্ষা—এই তিনটি অলঙ্কার বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় এবং পাঠকের কল্পনার জগৎকে সমৃদ্ধ করে তোলে।

এই শিক্ষামূলক পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং মন্তব্যে আপনার মতামত জানান!

No comments:

Post a Comment